শুক্রবার, ০৪ অক্টোবর ২০২৪, ০১:৩৬ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
হবিগঞ্জের শ্রীশ্রী শচীমাতা স্মৃতি ধামের অধ্যক্ষের রাস্তায় অবৈধভাবে গেইট নির্মানে অভিযোগ এনে সংবাদ সম্মেলন সিএমপি’র  পুলিশ কমিশনার’র  সাথে  সাক্ষাৎ করেন বাংলাদেশ মাইনরিটি ওয়াচ’র প্রতিনিধি দল সংখ্যালঘুদের উপর নির্যাতনের প্রতিবাদে গাইবান্ধায় অবস্থান কর্মসূচি ও বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত ! সাহিত্যের আলোকে ১৫তম বার্ষিক অনুষ্ঠান পুরান ঢাকায় হরিজনদের ওপর হামলার প্রতিবাদে রাঙামাটিতে বিক্ষোভ রাজধানী মতিঝিলে ২০০ কোটি টাকা মূল্যের দেবোত্তর সম্পত্তি উদ্ধার এবং ঐ জায়গায় তৈরি করা হবে মন্দির ভিন্নধর্মে বিয়ে,বোন সোনাক্ষীকে পরিবার থেকে ছেঁটে ফেললেন ভাই লব! রথ শোভাযাত্রা’র উদ্বোধনী আলোচনা সভা-২০২৪ সনাতন ৯২ বন্ধু পরিবার “ঢাকা বিভাগীয় কমিটি ঘোষনা ও মত বিনিময় সভা অনুষ্ঠিত বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে রথযাত্রা উদযাপিত

ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের অভিযোগে শরীয়তপুর ও ময়মনসিংহে দুজন গ্রেফতার।।

Spread the love

 

সনাতন টিভি ড্রেস্ক:

শরীয়তপুর জেলার ভেদরগঞ্জ উপজেলার মহিলার ইউনিয়নের সঞ্জয় রক্ষিত ও ময়মনসিংহের শম্ভুগঞ্জ জিকেপি ডিগ্রী কলেজের জীব বিজ্ঞানের শিক্ষক সুনীল চন্দ্র ঘোষকে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের অভিযোগে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী গ্রেপ্তার জেলা প্রেরণ করেছে।

জানা গেছে,লালনের একটি গানের দুটি লাইন লিখে ফেসবুক স্টোরিতে দেওয়ায় ইসলাম ধর্মকে কটূক্তি করার অভিযোগের পর এক যুবককে আটক করেছে পুলিশ।

ওই যুবকের নাম সঞ্জয় রক্ষিত (৪০)। তিনি শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ উপজেলার মহিষার ইউনিয়নের হরি নারায়ণ রক্ষিতের ছেলে। সঞ্জয় পেশায় স্বর্ণকার।

গত ২৮ শে এপ্রিল রোববার সঞ্জয়কে আটক করার বিষয়টি দ্য ডেইলি স্টারকে নিশ্চিত করেন ভেদরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিন্টু মন্ডল।

সঞ্জয়ের ফেসবুকের স্টোরির স্ক্রিনশটে দেখা গেছে, তিনি সেখানে লিখেছেন ‘সুন্নতে খাতনা দিলে যদি হয় মুসলমান, তাহলে নারী জাতির কি হয় বিধান’। এই দুটি লাইন লালনের ‘সব লোকে কয় লালন কি জাত সংসারে’ গানের।

রোববার রাত ১০টার দিকে ভেদরগঞ্জ থানার ওসি মিন্টু মন্ডল টেলিফোনে ডেইলি স্টারকে বলেন, ফেসবুকের স্টোরিতে দুটি লাইন লেখাকে ঘিরে সঞ্জয় রক্ষিত নামে এক যুবককে আটক করা হয়েছে। স্থানীয় কয়েকজন ব্যক্তি দাবি করেছেন, এই লেখার মাধ্যমে মুসলমান ধর্মাবলম্বীদের অনুভূতিতে আঘাত হানা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে তারা মৌখিক অভিযোগ করেছেন। তাই সামাজিক বিশৃঙ্খলা এড়াতে সঞ্জয়কে আটক করে শরীয়তপুর জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে। গত ২৯ শে এপ্রিল কোর্ট তাঁকে জামিন প্রদান করেন।

কারা অভিযোগ করেছেন, জানতে চাইলে ওসি তাদের নাম উল্লেখ না করে বলেন, স্থানীয় কয়েকজন এই অভিযোগ করেছেন।

যে গানের দুটি লাইন লিখে স্টোরিতে দিয়েছেন সঞ্জয়, সেটি লালনের গানের অংশ তা জানেন কি না, জানতে চাইলে ওসি বলেন, ‘কোনো কিছু জানার থাকলে থানায় আসেন। আমি এখন ব্যস্ত আছি, কথা বলতে পারব না।’ বলে ফোন কেটে দেন ওসি।

বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে রাত সোয়া ১০টার দিকে ভেদরগঞ্জ সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার মুশফিকুর রহমানকে ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘এই বিষয়ে কিছু বলতে পারব না। কোনো কিছু জানার থাকলে থানায় গিয়ে দেখা করেন।’

অপরদিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে পোস্ট শেয়ার ও কমেন্টস করায় ময়মনসিংহের শম্ভুগঞ্জ জিকেপি ডিগ্রী কলেজের জীব বিজ্ঞানের শিক্ষক সুনীল চন্দ্র ঘোষের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়েছে। ওই মামলায় অভিযুক্ত সুনীল চন্দ্র ঘোষকে গ্রেফতার করেছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ। গত ২৫ শে এপ্রিল দুপুরে কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশ সংশ্লিষ্ট মামলায় এই আসামিকে ময়মনসিংহের চীফ জুডিশিয়াল আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।

এর আগে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেওয়ার অভিযোগে গত ২৩ শে এপ্রিল মঙ্গলবার শম্ভুগঞ্জ বাইতুল আমান জামে মসজিদে ইমাম মো. কাইয়ূম বাদি হয়ে কোতোয়ালি মডেল থানায় মামলাটি দায়ের করে। পরে ওই মামলায় ডিবি পুলিশ অভিযান চালিয়ে সুনীল চন্দ্র ঘোষকে গ্রেফতার করে। পুলিশ জানায়, শিক্ষক সুনীল চন্দ্র ঘোষ মুক্তাগাছা উপজেলার মহিষদিয়া গ্রামের বাসিন্দা সতেন্দ্র ঘোষের ছেলে। তবে বর্তমানে সে ময়মনসিংহ নগরীর বাঘমারা এলাকায় বসবাস করত।

মামলার বাদি জানান, সম্প্রতি সুনীল চন্দ্র ঘোষ তার নিজের ফেইসবুক আইডি থেকে ‘বাবার গলাতেই বিয়ের মালা দিলেন পাক তরুণী’ শিরোনামে একটি লেখা শেয়ার করে। পরবর্তীতে এই পোস্টের কমেন্টে ধর্মকে ইঙ্গিত করে সে লিখেন- ‘যৌন ধর্ম বলে কথা ভাই, ওটা যৌন ধর্ম’। ফতোয়াবাজদের সংগঠন, আদম-টাদম সবই ভুয়া কাল্পনিক মানুষের তৈরী গল্প’। এরপর ধর্মীয় অনুভ‚তিতে আঘাত দেওয়া এই পোস্টটি মূহুর্তেই ভাইরাল হয়ে গেলে ওই পোস্টর বিরুদ্ধে ধর্মপ্রাণ জনগণ কঠোরভাবে সমালোচনাসহ প্রতিবাদ জানিয়ে নানা ধরনের কমেন্টস করে। এ ঘটনায় শম্ভুগঞ্জ এলাকার মুসলিমদের মধ্যে মুহুর্তেই চরম অসন্তোষ ও ক্ষোভে উত্তেজনাকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।

জেলা ডিবি পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. ফারুক হোসেন জানান, ঘটনাটি জানতে পেরে জেলা পুলিশ সুনীল চন্দ্র ঘোষকে গ্রেফতার করে। এ সময় তার কাছ থেকে ব্যবহৃত মোবাইল ফোনসহ ফেইসবুকে আপলোডকৃত পোস্টের স্কীনশর্ট জব্দ করা হয়েছে। গতকাল সুনীল চন্দ্র ঘোষকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করা হয়। এ খবরটি গত ২৬ শে এপ্রিল দৈনিক ইনকিলাব প্রকাশ করেছে।



আমাদের ফেসবুক পেইজ