সোমবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৫, ০২:০৭ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
খুলনার দাকোপে বিএনপি নেতা কর্তৃক সংখ্যালঘু হিন্দু নারীকে ধর্ষণের অভিযোগে এলাকায় উত্তেজনা চট্টগ্রামের ফটিকছড়িতে হিন্দু কৃষকের কাটা ধান আগুনে পুড়ে ছাই করেছে দুর্বৃত্তরা বাংলাদেশের বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের সর্বোচ্চ ধর্মীয় গুরু সংঘরাজ ড. জ্ঞানশ্রী মহাথেরের মহাপ্রয়াণ বাংলাদেশ সম্মিলিত সংখ্যালঘু যুক্তফ্রন্টের ৫১ সদস্যের আংশিক কমিটি ঘোষণা বান্দরবানে মন্দিরভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা কার্যক্রমের ষষ্ঠ পর্যায়ের কর্মশালা অনুষ্ঠিত ২৫ বছর বয়সে ইতিহাস মৈথিলী ঠাকুরের দাপটপূর্ণ জয় নোয়াখালীর সুবর্ণচরে প্রকাশ্যে হিন্দু যুবক হত্যা ১৩৩ বছরের ঐতিহ্যে রাঙা শারদীয় উৎসব: রাউজানের উত্তর গুজরা সেনবাড়ির দুর্গাপূজা চট্টগ্রামে শারদীয় পূজায় ‘আমাদেরই বসুন্ধরা’ থিমে নজর কাড়ছে এনায়েতপুর ব্রজধাম আরব আমিরাতে শুভ মহালয়া অনুষ্ঠান উদযাপন

নওগাঁয় পাঁচটি মন্দিরের কালি ও শিব প্রতিমা ভাঙচুর

Spread the love

পোরশা প্রতিনিধি: নওগাঁর পোরশায় কালি ও শিব মন্দিরে প্রতিমা ভাঙচুর করেছে দুর্বৃত্তরা। গতকাল সোমবার (১ নভেম্বর) রাতে নওগাঁর পোরশা উপজেলার মশিদপুর ইউনিয়নের ভবানীপুর গ্রামে কালি ও শিব মন্দিরে প্রতিমা ভাঙচুর করেছে দুর্বৃত্তরা। ভবানিপুর তিনটি ও সরিয়ালায় দুটিসহ মোট পাঁচটি মন্দিরের প্রতিমা ভাঙচুর করে দুর্বৃত্তরা।

উপজেলার ভবানীপুর গ্রামে শিব মন্দিরে, কালি ও সন্যাস মন্দির এবং শরিয়ালা গ্রামে লক্ষ্মী ও মনসা মন্দিরের মূর্তি ভাঙচুর করা হয়েছে। মন্দিরগুলোতে থাকা মূর্তির মাথা ও হাত-পাসহ বিভিন্ন অংশ ভেঙে দিয়েছে দুবৃর্ত্তরা। মঙ্গলবার দুপুরে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, মন্দিরগুলোর ভাঙা মূর্তিগুলোকে সরিয়ে ফেলা হয়েছে।

একই গ্রামের বাসিন্দা ও হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি সুদেব সাহা জানিয়েছেন, সবার অজান্তে দুর্বৃত্তরা রাতে মন্দিরগুলোর প্রতিমা ভাঙচুর করে চলে যায়। মঙ্গলবার (২ নভেম্বর) সকালে তারা দেখতে পেয়ে স্থানীয় প্রশাসনকে জানানো হয়েছে। এ ছাড়া শিব মন্দিরে শিব ঠাকুরের মূর্তির মাথা ভেঙে দিয়েছে। এ ছাড়া প্রায় একইভাবে পাশ্ববর্তী গ্রাম শরিয়ালায় লক্ষ্মী ও মনসা মন্দিরের মূর্তি ভাঙচুর করা হয়েছে। সোমবার (১ নভেম্বর) রাত ১১টা থেকে মঙ্গলবার (২ নভেম্বর) ভোর পাঁচটার মধ্যে দুবৃর্ত্তরা মূর্তিগুলো ভাঙচুর করেছে। সকালে তারা মূর্তিগুলোকে ভাঙচুর অবস্থায় দেখতে পেয়ে প্রশাসন ও পুলিশকে খবর দেন। পরে প্রশাসন ও পুলিশের লোকজন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নির্দেশে সকাল ১০টার দিকেই ভাঙচুর মূর্তিগুলোকে গ্রামের পুকুরে পানিতে ফেলে দেওয়া হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট মন্দির কমিটির লোকজন জানিয়েছনে, মন্দিরগুলোর মধ্যে ভবানীপুর গ্রামের শিব ও কালি মন্দির এবং শরিয়ালা গ্রামের লক্ষ্মী মন্দিরে মূর্তি রাখার স্থানগুলোতে লম্বালম্বি ও আড়াআড়িভাবে লোহার রডের দরজা রয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, দুর্বৃত্তরা রাতের আঁধারে বাঁশের লাঠি দিয়ে আঘাত করে এসব মন্দিরের মূর্তিগুলো ভাঙচুর করেছে। এ ছাড়া সন্যাস ও মনসা মন্দিরে কোনো দরজা নেই। দুবৃর্ত্তরা এসব মন্দিরের প্রতিমা বেদি থেকে ফেলে দিয়ে ভাঙচুর করেছে।

মশিদপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহাদদ হোসেন বলেন, এই এলাকায় এর আগে এ ধরনের ঘটনার নজির নেই। সাম্প্রতিক সময়ে গ্রাম দুটিতে সনাতন সম্প্রদায়ের মানুষের সঙ্গে মুসলিমদের কোনো রেষারেষি বা স্বার্থ সংশ্লিষ্ট কোনো বিরোধের ঘটনাও নেই। মূর্তি ভাঙচুরের ঘটনায় কারা সম্পৃক্ত থাকতে পারে, তার কিছুই আন্দাজ করা যাচ্ছে না। ঘটনা জানার পরপরই আমি ঘটনাস্থলে ছুটে গিয়েছিলাম। পরে খবর পেয়ে উপজেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা পরিদর্শন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। আশা করি, দ্রুত দোষীদের খুঁজে বের করে আইনানুযায়ী ব্যবস্থা নেবে প্রশাসন।

পোরশা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাজমুল হামিদ রেজা বলেন, আমরা ইতোমধ্যে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। মন্দির কমিটি ও স্থানীয় লোকজন এ ঘটনায় কারও বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্টভাবে কোনো অভিযোগ আমাদের কাছে করেননি। কী কারণে, কে বা কারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে, তদন্তসাপেক্ষে দোষীদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনা হবে।

ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন নওগাঁর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার গাজিউর রহমান। এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, কী করণে কারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে, তা এখনও চিহ্নিত করা যায়নি। পুলিশ এ ঘটনায় কাজ করছে। জমিজমা-সংক্রান্ত ও মন্দিরের কমিটি নিয়ে বিরোধ কিংবা অন্য সম্প্রদায়েরর সঙ্গে দ্বন্দ্বের জেরে এ ঘটনা ঘটেছে কি না অথবা কোনো গোষ্ঠী এ ধরনের ঘটনায় ঘটিয়ে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট কর দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করার উদ্দেশে এসব মূর্তি ভাঙচুর করা হয়েছে কি না, এসব বিষয় মাথায় নিয়ে ঘটনাটি তদন্ত করা হচ্ছে। আশা করছি, খুব দোষীদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনা যাবে।



আমাদের ফেসবুক পেইজ