চট্টগ্রাম কেন্দ্রিয় ইসকন উল্টো রথযাত্রায় শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিষ্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল
“রথযাত্রা উৎসব বিশ্বভ্রাতৃত্ববোধ ও সৌহার্দ্য সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠায় ব্যাপক ভুমিকা রাখছেন”
জাতিগত বিদ্বেষ, হিংসা, হানাহানি, ধর্মীয় উন্মাদনায় সারা বিশ্ব আজ যখন বিভ্রান্ত মানবতা ভূলন্ঠিত তখন রথযাত্রাা উৎসব বিশ্বভ্রাতৃত্ববোধ ও সৌহার্দ্য সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠায় ব্যাপক ভুমিকা রাখছে। বর্তমান সরকার কাউকে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হেনে বক্তব্য দেয়া মেনে নেবে না। জনগণ যার যার ধর্ম পালন করবে। কেউ যদি তার ধর্ম পালন করতে না চায় সেটা তার ব্যক্তিগত ব্যাপার। কিন্তু অন্যের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানার অধিকার তার নেই। ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হেনে বক্তব্য দেয়া থেকে বিরত থাকা উচিত। প্রত্যেকেরই নিজ নিজ ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়া উচিত। নিজ ধর্মের পাশাপাশি অন্যের ধর্মের প্রতিও শ্রদ্ধা প্রদর্শন করতে হবে এটাই বাস্তবতা। নিজেদের সংখ্যালঘু মনে করে খাটো না ভাবার জন্য হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানান। জাতির প্রতিটি আন্দোলন-সংগ্রামে সব সম্প্রদায়ের অসামান্য অবদান রয়েছে। বর্তমান সরকার সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিতে বিশ্বাসী। সকল ধর্মের মানুষ সমান ধর্মীয় অধিকার নিয়ে শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করছে। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে সকল ধর্মের মানুষের কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে লড়াই করে দেশ স্বাধীন করেছে।
আজ নন্দনকানন শ্রীশ্রী রাধামাধব মন্দির ও গৌর নিতাই আশ্রম প্রাঙ্গণে আন্তর্জাতিক কৃষ্ণভাবনামৃত সংঘ (ইসকন) চট্টগ্রাম আয়োজিত ২৫তম কেন্দ্রিয় বিশাল উল্টো রথযাত্রার রজতজয়ন্তীতে ধর্মীয় মহাসম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিষ্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল উপরোক্ত মন্তব্য করেন। রথযাত্রায় মহান আশির্বাদক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইসকনের হেডকোয়ার্টার ভারতের মায়াপুর হতে আগত ইসকনের অন্যতম সন্যাসী শ্রীমৎ অমিয় বিলাস স্বামী মহারাজ। নন্দনকানন ইসকন মন্দিরের অধ্যক্ষ পন্ডিত গদাধর দাস ব্রহ্মচারীর সভাপতিত্বে ও সুমন চৌধুরীর সঞ্চালনায় উদ্বোধক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক ও সাবেক মেয়র জনাব আ.জ.ম নাসির উদ্দিন। সাবেক মেয়র বলেন “আওয়ামী লীগ সরকারের সময় দেশে সব ধর্ম ও সম্প্রদায়ের মানুষ নিজ নিজ ধর্ম সম্পূর্ণ স্বাধীনভাবে পালন করে আসছে। কাউকে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করতে দেওয়া হবে না। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আমাদের সংবিধানে সব ধর্ম ও বর্ণের মানুষের সমান অধিকার সুনিশ্চিত করেছিলেন। তারই পদাঙ্ক অনুসরণ করে আওয়ামী লীগ সরকারের সময় বাংলাদেশে সকল ধর্ম ও সম্প্রদায়ের মানুষ নিজ নিজ ধর্ম সম্পূর্ণ স্বাধীনভাবে পালন করে আসছেন। এখন ধর্ম যার যার, উৎসব সবার’ উল্লেখ করে বলেন, ‘আমরা সব ধর্মের উৎসব সকলে মিলে আনন্দ সহকারে উদযাপন করি। কাউকে আমাদের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করতে দেব না। আগামী দিনে সব ধর্মের পারস্পরিক সম্প্রীতি আরও সুদৃঢ় হবে।”
নন্দনকানন ইসকন মন্দিরের সাধারণ সম্পাদক তারণ নিত্যানন্দ দাস ব্রহ্মচারীর স্বাগত বক্তব্যের মাধ্যমে প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খৃষ্টান ঐক্য পরিষদের প্রসিডিয়াম মেম্বার ডঃ জিন বোদি ভিক্ষু, সম্মানিত অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম ইসকনের বিভাগীয় সম্পাদক চিন্ময়কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারী। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা যুবলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক পার্থ সারথী চৌধুরী, রাজনীতিবিদ হেলাল আকবর চৌধুরী, কাউন্সিলর শৈবাল দাশ সুমন, কাউন্সিলর হাসান মুরাদ বিপ্লব, মহিলা কাউন্সিলর নিলু নাগ, মহিলা কাউন্সিলর রুমকী সেনগুপ্ত, মহানগর পূজা উদ্যাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক হিল্লোল সেন উজ্জ্বল, শিক্ষাবিদ অধ্যাপক বনগোপাল চৌধুরী, কোতোয়ালী থানা পুজা কমিটির সভাপতি লিটন শীল, অনিন্দ্য দেব। শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন ইসকন মোহরা মন্দির অধ্যক্ষ সর্বমঙ্গল গৌর দাস ব্রহ্মচারী, নন্দনকানন ইস্কন মন্দিরের সহ সভাপতি অকিঞ্চন গৌর দাস ব্রহ্মচারী, যুগ্ম সম্পাদক মুকুন্দ ভক্তি দাস ব্রহ্মচারী, বলরাম করুনা দাস, সুবল সখা দাস ব্রহ্মচারী, শেষরুপ দাস ব্রহ্মচারী, অপূর্ব মনোহর দাস ব্রহ্মচারী প্রমুখ। ঐতিহ্যবাহী মহাশোভাযাত্রা নন্দনকাননস্থ ২নং গলি শ্রীশ্রী গৌর নিতাই আশ্রম সম্মুখে থেকে শুরু হয়ে নগরীর গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে নন্দনকানন শ্রীশ্রী রাধামাধব মন্দিরে এসে শেষ হয়। মহাশোভাযাত্রায় চট্টগ্রামের বিভিন্ন উপজেলা থেকে জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে লক্ষাধিক ভক্তবৃন্দসহ কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক শিক্ষার্থীবৃন্দ ব্যানার, প্ল্যাকার্ড, ফেস্টুন, পৌরাণিক সাজ ও বাদ্যযন্ত্র নিয়ে যোগদান করেন।