অজয় মিত্র, নিজস্ব প্রতিনিধি
পুরান ঢাকার আগা সাদেক রোডের পাশে মিরনজিল্লা সেবক কলোনিতে ১০ জুলাই বুধবার দুপুরে মিরনজিল্লা এলাকায় নির্মিত নতুন ভবনে হরিজন সম্প্রদায়ের ৬৬ জন বাসিন্দাকে তুলে দিতে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের সম্পত্তি কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. মুনিরুজ্জামান সেখানে গেলে, উনাদের সাথে জোর করে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মোঃ আউয়াল হোসেন ভিতরে প্রবেশ করতে চাইলে বাধাপ্রাপ্ত হয়ে সে নিজে ও তার কর্মীদের দ্বারা হরিজন সম্প্রদায়ের উপর হামলা, বাড়িঘর, মন্দির ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভাঙচুরের প্রতিবাদে রাঙামাটিতে সনাতন যুব পরিষদের উদ্যোগে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
শনিবার বিকেলে সনাতন যুব পরিষদ রাঙামাটি জেলার সাথে বিভিন্ন সনাতনী ও সামাজিক সংগঠনের সহযোগিতায় এই মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
রাঙামাটি পৌরসভা প্রাঙ্গণ হতে বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়ে শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে গিয়ে সমাবেশে অনুষ্ঠিত হয়।
সনাতন যুব পরিষদ রাঙামাটি জেলার সভাপতি অজিত শীলের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সনাতন যুব পরিষদ রাঙামাটি জেলার সাধারণ সম্পাদক রাজু শীল, বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ রাঙামাটি জেলার সভাপতি শ্রী অরুপ মুৎসুদ্দী ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পঞ্চানন ভট্টাচার্য।
সনাতন যুব পরিষদ রাঙামাটি জেলার প্রচার সম্পাদক বিজয় করের সঞ্চালনায় এতে আরো বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু ছাত্র মহাজোট রাঙামাটি জেলার সভাপতি টুটুল দে, সনাতন যুব পরিষদ রাঙামাটি পৌর শাখার সাধারণ সম্পাদক ইভান পালিত, সদর উপজেলা শাখার সহ-সভাপতি রুপন দাশ, সনাতন বিদ্যার্থী সংসদ রাঙামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যাল শাখার সহ-সভাপতি সান্তনা দাশ, রাঙামাটি পুরোহিত কল্যাণ সমবায় সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক রণধীর চক্রবর্ত্তী, আন্তর্জাতিক কৃষ্ণ ভাবনামৃত সংঘ (ইসকন) রাঙামাটি জেলার সাধারণ সম্পাদক ইষ্ট দেব নিতাই দাস, একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির রাঙামাটি জেলার সাধারণ সম্পাদক সৈকত রঞ্জন চৌধুরী।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, হরিজন সম্প্রদায় এই দেশে চারশ বছরেরও বেশি সময় ধরে বসবাস করে আসছে। যারা শহর ও দেশকে পরিচ্ছন্ন রাখে প্রতিনিয়ত আজ তাদেরই এই দেশে ঠাঁই মিলছে না। প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সামনে একজন ওয়ার্ড কাউন্সিলরের নেতৃত্বে এই হামলা ও নির্যাতন চরম ন্যাক্কারজনক।
বক্তারা আরো বলেন, অসাম্প্রদায়িক এই বাংলাদেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপর নির্যাতন নিপিড়ন যেন নৈমিত্তিক ব্যাপার। অতীতে বাংলাদেশে অসংখ্য বার সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর হামলা, মঠ-মন্দির, বাড়িঘর ভাঙচুর, জালাও-পোড়াও, মা বোনদের ধর্ষণ নির্যাতন সহ নানান অত্যাচার করা হয়েছে, কিন্তু কোন ঘটনারই সুষ্ঠু বিচার আজ পর্যন্ত হয়নি। বিচারহীনতার এই সংস্কৃতি সংখ্যালঘু নির্যাতনের মাত্রাকে উৎসাহিত করে বার বার।
হরিজন সম্প্রদায়ের ওপর হামলার নেতৃত্বদানকারী কাউন্সিলর আউয়াল হোসেনসহ হামলাকারীদের দ্রুত গ্রেফতার করে শাস্তির আওতায় আনা ও হরিজন সম্প্রদায়ের মানুষজনকে উচ্ছেদপূর্ব আইনগত ও নিয়মতান্ত্রিক ভাবে বাংলাদেশ সংবিধানের ১৯ ধারার আলোকে সঠিক পূণর্বাসনের দাবি জানান বক্তারা।