যশোরের চৌগাছার তিনটি গ্রামের ৫০-৬০টি সংখ্যালঘু ও বিনিময়কারী পরিবারের প্রায় শতাধিক বিঘা সম্পত্তি অবৈধ দখলের প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদ ও ওই তিন গ্রামের বাসিন্দারা। মানববন্ধন ও স্মারকলিপি প্রদানের মাধ্যমে তারা প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
বুধবার বেলা সাড়ে ১১টা থেকে ১২টা পর্যন্ত শহরের মুক্তিযুদ্ধ ভাস্কর্য মোড়ে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। মানবন্ধনে ওই তিনগ্রাম এবং উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের পাঁচ শতাধিক ব্যক্তি অংশ নেন।
মানববন্ধন শেষে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের মাধ্যমে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বরাবর গ্রামবাসীর গণস্বাক্ষরকৃত একটি স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।
মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি অধ্যক্ষ বলাই চন্দ্র পাল, সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদ ভাইস চেয়ারম্যান দেবাশীষ মিশ্র জয়, পাশাপোল ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান প্রভাষক অবাইদুল ইসলাম সবুজ, উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সহ-সভাপতি সন্তোষ কুমার রায় ও সুকুমার সরকার, সাংগঠনিক সম্পাদক বিজয় কৃষ্ণ অধিকারী, পাশাপোল ইউনিয়ন পুজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি মহাদেব চন্দ্র রায়, সাধারণ সম্পাদক মৃনাল কান্তি রায়, চৌগাছা পৌর পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি অশোক কুমার হালদার, যুগ্ম সম্পাদক নিতাই সরকার, পূজা পরিষদ নেতা সবোল গাইন, শাহাজান আলী, শিবনাথ মন্ডল, সন্তোষ কুমার, মিন্টু সরদার, আশোক কুমার, সুমন সরদার, নুর ইসলাম, বিপুল মন্ডল, শুকেশ মন্ডল, সাধন হালদার, কিনারাম বিশ্বাস, শক্তিপদ বিশ্বাস, জয়দেব মন্ডল, গনেশ মন্ডল, দিনোবন্ধু মন্ডল, গ্রামবাসী নূর হোসেন, ওহাব আলী, লোকমান হোসেন, সাইফুল ইসলাম, বিল্লাল বিশ্বাস, সৈয়দ আলী, মনোয়ার আলী, আলী হোসেন, খাইরুল ইসলাম, গৌতম মন্ডল, শ্রীচরণ মন্ডল প্রমুখ।
গ্রামবাসীর গণস্বাক্ষরকৃত স্মারকলিপিতে বলা হয় উপজেলার ফুলসারা ইউনিয়নের সলুয়া গ্রামের ভূমিদস্যু ইছহক আলী এবং তার দুই ছেলে আকমল হোসেন ও আশরাফ হোসেন কর্তৃক উপজেলার পাশাপোল ইউনিয়নের হাউলি, মালিগাতি, দুড়িয়ালী গ্রামের সংখ্যাঘু ও বিনিময়কারি মুসলিম সম্প্রদায়ের শতাধিক বিঘা জমি অবৈধভাবে জালজালিয়াতির মাধ্যমে বিভিন্ন আদালতে মামলা করে জোরপূর্বক গুণ্ডাবাহিনী দিয়ে দখল করে নিয়েছে। এতে গ্রামগুলোর প্রায় ৫০-৬০টি পরিবার তাদের ন্যায্য সম্পত্তি হতে বঞ্চিত হয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছে। তাদের গুণ্ডাবাহিনী হিন্দু পরিবারগুলোকে ভারতে চলে যেতে হুমকি দিচ্ছে এবং বিনিময় করে বাংলাদেশে আসা মুসলিমদেরকেও ফের ভারতে চলে যাওয়ার জন্য হুমকি-ধামকি ও মারপিট করছে। ফলে ওই তিনটি গ্রামসহ আসেপাশের গ্রামগুলির লোকজন ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে পড়ছে। এ অবস্থায় সরেজমিনে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণের আবেদন করেছেন তারা।
মানববন্ধনে উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান দেবাশীষ মিশ্র জয় বলেন, গায়ের জোরে ওই চক্র জমি দখল করেছে। এলাকার হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষরা খুবই অসহায়। মানববন্ধন শেষে আমরা প্রশাসনের কাছে স্বারকলিপি প্রদান করবো। প্রশাসনের কাছে আমাদের দাবি, ঘটনা সুষ্ঠু তদন্ত পূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে।
তিনি বলেন, জুলুম নির্যাতন ও অন্যায়ভাবে কারো সম্পদ দখল করা দণ্ডনীয় অপরাধ। আমরা আইনি লড়াই চালিয়ে যাব। অসহায়দের পাশে শতশত সাধারণ মানুষ রয়েছে। তাদের অধিকার আদায়ে আমরা সব সময় সচেষ্ট থাকবো। এমন অন্যায় মেনে নেয়া যায় না।
সূত্রঃ অমৃতবাজার পত্রিকা