স্বপন কর্মকার লামা (বান্দরবান প্রতিনিধি) ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা পরিবেশে পঞ্চমী তিথিতে দেবী শ্রী শ্রী সরস্বতীকে আরাধনার লক্ষ্যে প্রতিবারের ন্যায় এবারও বৃহৎ পরিসরে বান্দরবানের লামায় বিভিন্ন আয়োজনের মধ্যে দিয়ে শুরু হয়েছে বিদ্যার দেবী শ্রী শ্রী সরস্বতী পূজা। সোমবার (১৫ ফেব্রুয়ারী) সন্ধ্যায় শুভ অধিবাসের মধ্যে দিয়ে উৎসবমুখর পরিবেশে এই পূজা শুরু হয় আনুষ্ঠানিকতা।
সরস্বতী পূজা উপলক্ষে লামায় বিভিন্ন পূজার মণ্ডপে ঘুরে দেখা যায়, হিন্দু সম্প্রদায় বিশেষ করে শিক্ষার্থীরা বাণী অর্চনাসহ নানা ধর্মীয় অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। পূজা চলাকালীন সময় উলু ও শঙ্খ ধ্বনিতে মুখরিত হয়ে উঠে প্রতিটি পূজামণ্ডপ। মন্দিরে অনুষ্ঠানমালায় আছে ধর্মীয় আলোচনা সভা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, কুইজ প্রতিযোগিতা, সন্ধ্যা আরতি, আলোকসজ্জার আয়োজন করা হয়েছে। দেবী সরস্বতী সত্য, ন্যায় ও জ্ঞানালোকের প্রতীক। বিদ্যা, বাণী ও সুরের অধিষ্ঠাত্রী। অজ্ঞতার অন্ধকার দূর করতে কল্যাণময়ী দেবীর চরণে ‘সরস্বতী মহাভাগে বিদ্যে কমললোচনে/বিশ্বরূপে বিশালাক্ষী বিদ্যংদেহী নমোস্তুতুতে’ এই মন্ত্র উচ্চারণ করে বিদ্যা ও জ্ঞান অর্জনের জন্য প্রণতি জানিয়ে দেবীর চরণে পুষ্পাঞ্জলি অর্পণ করেন।
সরস্বতী পূজা উপলক্ষে লামা কেন্দ্রীয় শ্রী শ্রী হরিমন্দির দূর্গাপূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক বিজয় আইচ্ জানান, মাঘ মাসের শুক্লা পঞ্চমী তিথিতে সরস্বতী পূজা উদযাপন হয়। জ্ঞান, সংগীত, শিল্পকলা, বুদ্ধি ও বিদ্যার দেবী সরস্বতী পূজা। ধর্মীয় বিধান অনুসারে সাদা রাজহাঁসে চড়ে বিদ্যা ও সুরের দেবী সরস্বতী পৃথিবীতে আসেন। তিনি ভক্তদের শিক্ষা ও জ্ঞান দান করেন। আজ সকাল ৮টায় শুরু হয়েছে পূজা অর্চনা এবং ৯টা থেকে শুরু অঞ্জলি প্রদান। সন্ধ্যা ৬টায় হবে আরতি অনুষ্ঠান। এরপর চলবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
এ অনুষ্ঠানে আবহমান বাঙালির অসাম্প্রদায়িক সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ধারণ করে হিন্দুদের পাশাপাশি অন্য ধর্মাবলম্বী মানুষও এই উৎসবে ধর্ম, বর্ণ ও সম্প্রদায় নির্বিশেষে সকলের অংশগ্রহণ দেশের অসাম্প্রদায়িক চেতনায় ও ঐতিহ্যে উৎসবে যোগদেন করেন। পূজার ঐতিহ্যকে আরো সুদৃঢ় করতে সবাইকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে অবদান রাখার আহ্বান জানান তিনি।