নিজস্ব প্রতিবেদক: চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সংস্কৃত বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. কুশল বরণ চক্রবর্তীকে আটকে রেখে মব সৃষ্টি ও হেনস্তার ঘটনায় নিন্দা জানিয়েছে ‘বাংলাদেশ সচেতন সনাতনী নাগরিক সমাজ’। বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) বিকেলে চট্টগ্রাম নগরীর কোতোয়ালি পাথরঘাটাস্থ একটি মন্দিরে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে তারা এই প্রতিক্রিয়া জানায়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংগঠনের সহ-মুখপাত্র সোমা রানী দাশ। সংগঠনটি জানায়, অধ্যাপক কুশল বরণ চক্রবর্তীকে একটি পরিকল্পিত ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে মব তৈরি করে অপমানজনকভাবে আটকে রাখা হয় এবং তার পদোন্নতি পরীক্ষায় অংশগ্রহণে বাধা দেওয়া হয়। একইসাথে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালিয়ে তাকে চাকরিচ্যুত করার মতো চূড়ান্ত হুমকিও দেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু সংহতি চট্টগ্রাম মহানগর কর্তৃক আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু সংহতি’র প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক মিন্টু কুমার দাশ এবং সচেতন সনাতনী নাগরিক সমাজের সহ মুখপাত্র ও পাথরঘাটা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি গোপাল দাশ টিপু।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, “বাংলাদেশের প্রায় ৩ কোটি সনাতনী নাগরিক অধ্যাপক কুশল বরণ চক্রবর্তীর প্রতি এ ধরনের আচরণে মর্মাহত ও ক্ষুব্ধ। তাকে অপমান করা মানে গোটা সনাতনী সমাজকে অপমান করা।”
সংগঠনের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, অধ্যাপক কুশল একজন সাহসী ও নীতিবান বুদ্ধিজীবী হিসেবে অতীতেও দেশের সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর ঘটে যাওয়া সহিংসতার বিরুদ্ধে সোচ্চার ভূমিকা পালন করেছেন। বিশেষ করে গত ৫ আগস্টের পর থেকে তিনি ধারাবাহিকভাবে সংখ্যালঘুদের ওপর সহিংসতার প্রতিবাদ জানিয়ে আসছিলেন।
সংগঠনের নেতৃবৃন্দ অভিযোগ করেন, অতীতেও তিনি নানা ষড়যন্ত্রের শিকার হলেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে কখনও অপরাধীদের বিরুদ্ধে কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। তবুও তিনি সবসময় আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থেকেছেন।
শিক্ষক হেনস্তার প্রতিবাদের পাশাপাশি সারাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতন, মন্দির ভাংচুর, খিলক্ষেত মন্দির পুনঃনির্মাণ, মব জাস্টিস প্রতিরোধ, বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের “মুখপাত্র” শ্রীমৎ চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীসহ সকল কারাবন্দীর নিঃশর্ত মুক্তি ও দ্রুত আট (০৮) দফা বাস্তবায়নের দাবি জানানো হয় সংবাদ সম্মেলন থেকে।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা সরকার ও সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের কাছে অধ্যাপক কুশলের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং তাকে দ্রুত তার কর্মস্থলে সম্মানের সাথে পুনর্বহাল করার আহ্বান জানান।