 
						
অন্তর পাল আকাশ, নিজস্ব প্রতিবেদক: চট্টগ্রামের নন্দনকাননস্থ শ্রীশ্রী তুলসীধামে জগদগুরু শ্রীমৎ স্বামী অদ্বৈতানন্দ পুরী মহারাজের ১২২তম আবির্ভাব দিবস ধর্মীয় ভাবগম্ভীর পরিবেশে উদযাপিত হয়েছে।
সোমবার (১৯ মে) উৎসবের সূচনা হয় তুলসীধামের মোহন্ত ও ঋষিধামের অধিপতি শ্রীমৎ দেবদীপ পুরী মহারাজের পৌরহিত্যে উপাসনা ও চতুষ্প্রহর মহানামযজ্ঞের মাধ্যমে। এরপর অনুষ্ঠিত হয় শ্রীপদে তুলসীদান, শ্রীমদ্ভগবদ্গীতা পাঠ, দীক্ষাদান, সমাধিপীঠে গুরুপূজা ও পুষ্পাঞ্জলি প্রদান। সন্ধ্যায় প্রদীপ প্রজ্জ্বলন, সঙ্গীতাঞ্জলি ও স্বামীজির জীবন ও দর্শন বিষয়ে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। অদ্বৈত-অচ্যুত মিশন বাংলাদেশের উদ্যোগে উপস্থিত ভক্তদের মাঝে মহাপ্রসাদ বিতরণ করা হয়। উৎসবে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আগত ভক্তবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন, যা অনুষ্ঠানকে আরও প্রাণবন্ত করে তোলে।
উল্লেখ্য : শ্রীমৎ স্বামী অদ্বৈতানন্দ পুরী মহারাজ ১৯০৩ সালের ১৯ মে চট্টগ্রামের বাঁশখালীর বাণীগ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। শৈশবেই তিনি আধ্যাত্মিক চেতনার পরিচয় দেন এবং মাত্র সাত বছর বয়সে শিবতম মহাযোগী শ্রীমৎ স্বামী জগদানন্দ পুরী মহারাজের নিকট যোগদীক্ষা গ্রহণ করেন।
প্রথাগত শিক্ষায় তিনি অঙ্ক ও সংস্কৃতশাস্ত্রে বিশেষ দক্ষতা অর্জন করেন এবং ১৯২৩ সালে প্রবেশিকা পরীক্ষায় প্রথম বিভাগে উত্তীর্ণ হন। পরে তিনি আয়ুর্বেদ চিকিৎসা ও সংস্কৃত শিক্ষায় নিয়োজিত থাকলেও তীর্থভ্রমণ ও সাধনাই হয়ে ওঠে তাঁর মূল ব্রত। তিনি কাশী, বৃন্দাবন, কেদার-বদ্রী, অমরনাথ, রামেশ্বরম, পুরীসহ বহু তীর্থস্থানে সাধনাভিজ্ঞতা অর্জন করেন।
১৯৫৪ সালে বাঁশখালীর কোকদণ্ডীতে ঋষিধাম প্রতিষ্ঠা করেন এবং ১৯৬১ সালে চট্টগ্রামের নন্দনকাননে প্রতিষ্ঠিত তুলসীধামের মোহন্ত হিসেবে অভিষিক্ত হন। তিনি ছিলেন একজন শক্তিশালী ধর্মতাত্ত্বিক ও আধ্যাত্মিক লেখক। তাঁর রচিত গ্রন্থগুলোর মধ্যে ‘গীতায় গুরুশিষ্য’, ‘দশমহাবিদ্যা’, ‘শালগ্রাম তত্ত্ব’ ও ‘উপাসনা পদ্ধতি’ উল্লেখযোগ্য।
তিনি ১৯৬৬ সালের ১৬ এপ্রিল তুলসীধামে তিরোধান করেন। তাঁর জীবন ও সাধনার প্রভাব আজও অগণিত ভক্তের হৃদয়ে অনুপ্রেরণা জোগায়।