 
						
বিজয় সরকার, মৌলভীবাজার :-
শ্রীশ্রী শ্রীমঙ্গলেশ্বরী কালী মন্দির বাংলাদেশের মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গলে অবস্থিত। এটি শৈল্পিক কারুকাজ ও অপূর্ব নির্মাণশৈলীর জন্য বিশেষভাবে পরিচিত। মন্দিরটি লাল ও সোনালী রঙে সজ্জিত, যেখানে সোনালি ও ব্রোঞ্জ রঙের কারুকাজ ফুটিয়ে তোলা হয়েছে, যা একে আরও দৃষ্টিনন্দন করে তুলেছে।
পাঁচ স্তরবিশিষ্ট এই মন্দিরটি দেখা যাবে শহরের চৌমুহনা থেকে কলেজ সড়ক হয়ে একটু এগিয়ে রাস্তার বাম পাশে। 
এই মন্দিরের প্রধান দেবী হলেন শ্রীমঙ্গলেশ্বরী কালী মাতা । মন্দিরটি পাঁচ স্তরে নির্মিত, যার উচ্চতা প্রায় ৪৮ ফুট। মন্দিরের কারুকাজে জবা ফুল, বেলপাতা ও স্বস্তিকা চিহ্নের ব্যবহার দেখা যায়।
২০১২ সালে মন্দিরটি নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছিল। দীর্ঘ ৯ বছরে নির্মান কাজ শেষ হয়ে ২০২১ সালের ২৪ মে মন্দিরটি প্রতিষ্ঠা করা হয়। মন্দিরের প্লান, ডিজাইন ও নির্মাণ কাজ তদারকি করেন প্রকৌশলী নিশিত রঞ্জন দত্ত পুরকায়স্থ। তিনি জানান, ১৩০০ বর্গফুট জায়গার ওপর এই মন্দির নির্মাণ করা হয়। মন্দিরের উচ্চতা ৪৮ ফুট। প্রবেশ এবং বের হওয়ার জন্য মন্দিরের চারদিকে পাঁচটি ফটক রয়েছে। মন্দিরটি নির্মাণও করা হয়েছে পাঁচটি স্তরে। রয়েছে ছোট বড় পাঁচটি চূড়া। কারুকাজে রয়েছে জবাফুল, বেলপাতা ও স্বস্তিকা। কালীমাতাকে প্রদক্ষিণের জন্য মূল মন্দিরের ভিতরে রাখা হয়েছে ফাঁকা বারান্দা। মেঝেতে দেওয়া হয়েছে মার্বেল পাথর। 
মন্দির পরিচালনা কমিটির পরিকল্পনা অনুযায়ী, ভবিষ্যতে মন্দির কমপ্লেক্সে দুর্গা মন্দির, শিব মন্দির, ভোগ মন্দির ও আবাসন মন্দির নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে।
সনাতন ধর্মাবলম্বীদের পাশাপাশি দেশ-বিদেশের বিভিন্ন জাতি ধর্মের দর্শনার্থীরা এসে প্রার্থনা ও মন্দির কমপ্লেক্সের সৌন্দর্য উপভোগ করতে দেখা যায়।
জানা যায়, ঊনবিংশ শতাব্দীর তৃতীয় দশকে বীরচন্দ্র ধর ও ভাড়াউড়া চা বাগানের কয়েক ধর্মানুরাগী জমি দান করে এই কালীবাড়ী প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯৬২ সালে এক ভয়াবহ অগ্নিকান্ডে শ্রীমঙ্গলের অনান্য ঘরবাড়ির সঙ্গে কালীমন্দিরও পুড়ে যায়। পরে শহরের প্রাক্তন চা বাগান মালিক মৃত অজিত চৌধুরী পাকা কালী ও দুর্গামন্দির তৈরি করে দেন।
সেখানের একজন মায়ের ভক্ত সনাতন টিভি কে জানান, এই মন্দিরে প্রতিদিন সকাল ৭টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত পূজা-অর্চনা অনুষ্ঠিত হয়। বিশেষ করে শ্যামাপূজা উপলক্ষে হাজার হাজার ভক্ত এখানে সমবেত হন। ভক্তরা মানত করেন এবং দেবীর কাছে প্রার্থনা করেন।